শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ যদি ভেড়ে যায় তাহলে গাঁটের ব্যথা বাড়ে। এটি নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে একটু বেশ সমস্যা দেখা যায়।

ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণের সহজ উপায় হল খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন। ওষুধ খেয়ে এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনেও নিরাময় করা যেতে পারে।

কিছু নির্দিষ্ট ধরণের খাবারের কারণে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হতে পারে। পারবারিক কারণেও বাড়তে পারে ইউরিক অ্যাসিড। স্থূলতা বা পেটের চর্বি বাড়ার কারণেও ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকেও এ সমস্যা বাড়ে।

ওগুলো ছাড়াও ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যায় ডায়াবেটিস, কিডনির রোগ, হাইপোথাইরয়েডিজমও, ক্যান্সার বা কেমোথেরাপি ও চর্মরোগ হলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে প্রাণীজ প্রোটিন খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মাংস, মাছে থাকে প্রচুর পরিমাণে পিউরিন থাকে যা ইউরিক অ্যাসিডে পরিণত হয়।

অস্থিসন্ধিতে অত্যধিক ইউরিক অ্যাসিড জমা হলে গাঁটের ব্যথা হয়। তাই মাছ বিশেষ করে ইলিশ খাবেন না। রেড মিট খাওয়াও ঠিক নয়।

এছাড়া চিংড়ি মাছ খাওয়াও এড়িয়ে চলতে হবে। অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডযুক্ত শাকসবজি, ফল এবং লেবু খাওয়া উচিত নয়।

যেমন– মাশরুম, মটরশুটি, মটর, ডাল, কলা, অ্যাভোকাডো, আনারস ইত্যাদি। প্রতিদিনের খাবারে চর্বিজাতীয় খাবার কম খান। বেশি পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট খেলে শরীরের ইউরিক অ্যাসিড হজম করার ক্ষমতা কমে যায়। সেক্ষেত্রে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।

ইউরিক অ্যাসিড কমাবেন কীভাবে?
ডায়েট চার্ট মেনে খান। প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। ডায়েটে যা রাখবেন-

আপেল সিডার ভিনেগার: ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে দুর্দান্ত উপকারী আপেল সিডার ভিনেগার। এক গ্লাস পানির সাথে ৩ চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার খান নিয়মিত।

চেরি: চেরিতে রয়েছে প্রদাহ বিরোধী উপাদান। যা ইউরিক অ্যাসিড জমতে বাধা দেয়। এতে ব্যথা এবং ফোলাভাব কমে।

বেরি: চেরি ছাড়াও স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি এবং জামে প্রদাহ-বিরোধী গুণ রয়েছে। উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড নিরাময়ে এই ফল কার্যকর।

লো-ফ্যাট দুগ্ধজাত পণ্য: দুগ্ধজাত পণ্য শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়ায় বলে মনে করা হয়। দুধের পরিবর্তে সয়া বা বাদাম দুধ বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন। যা প্রোটিন সমৃদ্ধ।

অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না করুন। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

গ্রিন টি: গ্রি টিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করে। গ্রিন টি খেলে ইউরিক অ্যাসিড যেমন কমে, তেমন গাঁটের ব্যথার উপশমও হয়।

লেবু: লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন পানিতে লেবুর রস দিয়ে খান। এতে উপকার পাবেন।

প্রচুর পানি পান করুন: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড বেরিয়ে যেতে পারবে। নির্দিষ্ট সময় পর পর পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

ফ্রেঞ্চ বিনস : দিনে দু’বার ফ্রেঞ্চ বিনসের রস খেলে ইউরিক অ্যাসিড কমে যায়। ঘরোয়া পদ্ধতি হিসেবে এটি বেশ কার্যকর।